আবু ইউসুফ মনোহরগঞ্জ কুমিল্লা: রাত পোহালেই পবিত্র মাহে রমজান মাস শুরু। এরই মধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছেন নিত্যপণ্যের দাম। বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে সয়াবিন তেল। দামের চাপ আর ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে দিশেহারা সাধারণ ক্রেতা।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে বজারগুলোতে স্বাভাবিক হারে মিলছে না বোতলজাত সয়াবিন তেল। উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো থেকে সঠিক সরবরাহ না থাকায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। গত কয়েক মাস ধরে চাহিদার চার ভাগের বিপরীতে মিলছে একভাগের কম। সেগুলো কিনতেও গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামে ভোক্তারা কিনছেন খোলা তেল। সম্প্রতি মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
মনোহরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ও বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোথাও বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলছে না। তবে অখ্যাত কোম্পানির সয়াবিন তেল মিলছে কিছু কিছু, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ তেল নেওয়ার ক্ষেত্রেও কোম্পানির অন্যান্য পণ্য নেওয়ায় বাধ্যবাধকতাসহ ব্যবসায়ীদের মানতে হচ্ছে নানাবিধ শর্ত। তারপরও মিলছে চাহিদার একভাগ তেল। এ দিয়ে চাহিদার কোনো অংশ মেটানোও সম্ভব নয় বলে দাবি তেল বিক্রেতাদের। দু’একটি কোম্পানির তেল খুচরা পর্যায়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা দোকানি আমির ও আবদুর রহমান জানান, দাম না বাড়ানোয় লোকসানের বাহানায় তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে কোম্পানিগুলো। এখন দাম বাড়ালেও তেল দিচ্ছে না।
এদিকে বোতলের সয়াবিন না পেয়ে খোলা তেলের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন ক্রেতারা। এ সুযোগে খোলা তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে তেল বিক্রি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে তাদের মধ্যে।
পাইকারি দোকানে আসা ক্রেতা হাসান বলেন, দেড়/দুই মাস ধরে তেল নিয়ে ঝামেলায় আছি। রাত পোহালেই পবিত্র রমজান মাস শুরু। এমনিতেই সবকিছুতে ভেজাল। বোতলের তেল খেয়েও নানা রোগ বালাইয়ের ভুগতে হয়। এরমধ্যে খোলা তেল খেতে হচ্ছে। তার উপর দোকানীরা খোলা তেলের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন।
আরেক ক্রেতা বলেন, দাম ৮ টাকা করে বাড়ানো হলো। তাতেও তেল নেই। এদিকে অতিরিক্ত চাপের সুযোগ নিচ্ছেন খোলা তেল ব্যবসায়ীরা। প্রতি লিটার সয়াবিনে সরকার নির্ধারিত দামের ২০-৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া বোতলজাত তেল সংকটের কারণে সাধারণ মানুষ খোলা তেলের প্রতি ঝুঁকে পড়ায় সেখানেও সংকট দেখা দিয়েছে।
সরকার নির্ধারিত মূল্যের বাইরে অতিরিক্ত দামে তেল বিক্রির অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি খোলা তেল ব্যবসায়ীদের। তারা জানান, সরকার লিটার প্রতি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। তারা বিক্রি করেন কেজি হিসেবে। লিটার এবং কেজির পার্থক্য প্রায় এক থেকে দেড়শো গ্রামের। লিটারের তুলনায় বেশি ওজনের ওইটুকু দাম তারা ধরে নিচ্ছেন। এর বাইরে বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে না বলেও দাবি তাদের।