1. live@dailytrounkhota.com : news online : news online
  2. info@www.dailytrounkhota.com : দৈনিক তরুণ কথা :
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
মনোনয়ন না পেয়ে কুমিল্লা নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ লাকসামে অর্ধশতাধিক স্পটে হাত বাড়ালেই মিলছে মাদকদ্রব্য শহীদ মুহাম্মদ শাহজাহান হত্যার বিচার চায় জামায়াতে-ছাত্র শিবির মনোহরগঞ্জের বাইশগাঁওয়ে জামায়াতের নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত এনজিও কর্মীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বিএনপি নেতা বহিষ্কার সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে ফের আমির হলেন ডা. শফিকুর মনোহরগঞ্জে র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে জাতীয় সমবায় দিবস পালন কিশোর কন্ঠ পাঠক ফোরামের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত মনোহরগঞ্জের উত্তর হাওলা ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত নভেম্বরের মধ্যে গণভোটসহ ৫ দাবিতে ইসিতে জামায়াতসহ ৮ দলের স্মারকলিপি

গল্প –শেষ পারানির কড়ি –সুনির্মল বসু

এম.এ.মান্নান.মান্না:
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে
সেদিন বিকেলে খোলা মাঠে দাঁড়িয়ে আকাশের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম।
আকাশ বলল, এতদিনে আমার কথা মনে পড়লো?
বললাম, একটা ঝামেলায় পড়ে গেছি।
কী ব্যাপার?
আগে বুঝতে পারিনি। প্রেমে ছ্যাঁকা খেয়েছি।
খুলে বলো।
আমি সোমলতাকে ভালোবাসতাম। ও মহীতোষকে
বিয়ে করে ব্যাঙ্গালোরে চলে গেছে।
যে থাকার নয়, চলে যাবার, সে তো যাবেই।
আপনি ব্যাপারটাকে এভাবে ক্যাজুয়ালি দেখবেন না। এটা আমার লাইফ এন্ড ডেথের ম্যাটার।
কী বলতে চাও?
আমার কি কিছু করার আছে।
আছে।
কি?
তুমি ব্যর্থ প্রেমের কবিতা লিখে যাও। কোনদিন অ্যাওয়ার্ড পেতে পারো।
আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করবেন না।
আমার বন্ধু হতে পারবে।
কেন?
এটাই সোমলতাকে ভুলে যাবার একমাত্র পথ।
ভেবে দেখছি। আমাকে একবার নদীর সঙ্গে দেখা করতে যেতে হবে।
অন্য একদিন বিকেলে আমি নদীর কাছে গেলাম।
বললাম, ভালো আছো?
নদী বলল, ছোটবেলায় বাবা মার হাত ধরে আসতে,
আজকাল আমাকে ভুলে গেছো।
তা নয়। আমি একটু প্রবলেমে পড়েছি।
কেসটা খুলে বলো।
সোমলতা নামের একটি মেয়ে
আমাকে সাত বছর ধরে প্রেম করে অবশেষে ল্যাঙ মেরে অন্য ছেলেকে বিয়ে করেছে।
তা আমি কি করবো?
ওরা বিকেলে তোমার কাছে আসে। ওদের একটু বুঝিয়ে বলতে পারবে?
সময় চলে গেছে।
তোমার কোন হেল্প পাবো না?
না।
হোয়াই?
ও মেয়ে তোমাকে কোনদিন ভালবাসতো না।
এ কথা কেন বলছো?
ভালবাসলে তোমাকে ছেড়ে যেত না।
এ কথা শুনে আমি কিন্তু কষ্ট পাচ্ছি।
জানি। কিন্তু অপ্রিয় সত্য হলেও, আমি সেটাই বলবো।
আমি তাহলে এখন কি করি?
তোমার বন্ধু নেই?
আছে। তাঁরা আমাকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে।
তুমি আমার বন্ধু হতে পারো।
বলছো। বেশ, ভেবে দেখি। আমাকে একবার অরণ্যের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
ফাইনাল ডিসিশন আমাকে জানিও।
পরদিন বিকেলে আমি অরণ্যের কাছে গেলাম। শিরিষ গাছের ডালে তখন বুলবুলি পাখি বসে শিস দিচ্ছিল।
বসন্ত বাউরি ল্যাজ ঝুলিয়ে বসেছিল।
দমকা বাতাস বয়ে যাচ্ছিল।
জিজ্ঞাসা করলাম,
কেমন আছো? কতদিন পর তোমাকে দেখছি।
ভালো আছি। আগে তুমি গাছের সঙ্গে কথা বলতে।
শহরে গিয়ে আমাদের কথা ভুলে গেছো।
না, তা নয়।
তাহলে কি?
আমি একটা ভালোবাসার চক্করে পড়ে গিয়েছিলাম।
সে তো ভালো কথা। মেয়েটি কে?
সোমলতা।
তারপর?
মেয়েটা পালটি খেয়ে গেল। আমি ল্যাঙ খেলাম।
তুইতো খুব কষ্টে আছিস!
রাতে ঘুম আসে না।
একটা মেয়ে জীবন থেকে ফুটে গেলে, লাইফ লোপাট হয়ে যায় নাকি?
আমাকে কি করতে বলছো?
যেটা বলব করতে পারবি?
বলেই দ্যাখো না।
আমার বন্ধু হয়ে যা।
তাহলে?
তাহলে গাছপালা পাখি দেখে দেখে জীবন কেটে যাবে।
মন্দ বলো নি।
বাড়ি ফিরছিলাম।
পুরনো বন্ধু সৌমিত্রের সঙ্গে দেখা।
বলল, কিরে? কেমন আছিস?
বললাম, একটা প্রবলেমে পড়ে আমি নদীর কাছে, অরণ্যের কাছে, আকাশের কাছে গিয়েছিলাম।
প্রবলেমটা কি?
সোমলতা আমায় ছেড়ে চলে গেছে।
ও হয়তো বেটার খুঁজছিল।
হবে হয়তো।
তোর প্রবলেম সলভ হলো?
হয়েছে।
কিভাবে?
এখন আকাশ আমার বন্ধু, ভোরবেলায় দুপুর বেলায় আর সন্ধ্যেবেলায় অরণ্য পাখির গান শুনে আমার দিন কাটে। নদীর কাছে গিয়ে বসলে, আমার সময় সুন্দরভাবে পার হয়ে যায়।
সৌমিত্র আমাকে একটা সিগারেট অফার করল।
বলল, প্রকৃতির চেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু তুই কোথাও পাবি না। চোখের সামনে এত বিশাল সৌন্দর্য রয়েছে, আর তুই নর্দমায় পা আটকে বসে আছিস?
সন্ধ্যে হয়ে আসছিল। আকাশে দু একটা তারা। মাথার উপর থালার মতো বড় চাঁদ। ফেরবার পথে
গাছেদের আলো ছায়াপথে পড়েছিল।
পথের মাঝখানে পাকা চুল দাড়িওয়ালা একজন খুব চেনা মানুষকে দেখলাম।
সৌমিত্র বলল, ওনাকে চিনতে পারলি? প্রণাম কর।
আমি আশ্চর্য, রবীন্দ্রনাথ, আপনি?
তিনি মৃদু হাসলেন।
সৌমিত্র বলল, জীবনে চলার পথে এটাচিকেসে যখন পিঙ্গল দুঃখ কষ্ট নিয়ে চলবি, তখন ওনাকে স্মরণ করবি। জীবনে কোনদিন কোন দুঃখ কষ্ট তোকে ছুঁতে পারবে না।
নর্দমার কাদা থেকে আমি এখন পা তুলে নিয়েছি। আমার চোখ মুখের উপর এত জ্যোতির্ময় আলো এসে পড়েছে, জীবনের এই রহস্য কথা এতদিন জানতে পারিনি কেন?

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট