মনোহরগঞ্জ প্রতিনিধি:
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানাধীন ১নং ২২গ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের কেয়ারি গ্রামের গৃহবধূ রত্নার (২৬) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, রত্না নিজ গ্রাম কেয়ারিতেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর স্বামীর নাম শহীদ, যিনি এলাকাবাসীর কাছে ‘বাদল’ নামে পরিচিত এবং বর্তমানে সৌদি আরবে প্রবাসী।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শহীদ ও রত্নার বিবাহ পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হয়। তবে বিবাহের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছিল বলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। মোবাইলে যোগাযোগ করলে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়শই পারিবারিক বিষয়ে মনোমালিন্য দেখা যেত এবং তা কখনো কখনো বড় আকার ধারণ করত।
স্থানীয় যুবদল নেতা জনাব বাবলু জানান, “গতকাল রাতে রত্না তার স্বামীকে ফোন করেছিলেন। ফোন রিসিভ করার পর তিনি (স্বামী) জানান, ব্যস্ত আছেন এবং পরে কথা বলবেন।” এর কিছুক্ষণ পরই ঘটে যায় মর্মান্তিক এই ঘটনা।
ঘটনার পর পরই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন পোস্ট ও মন্তব্যে বলা হচ্ছে, “রত্নাকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেলেও তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ও ফুলার চিহ্ন রয়েছে।” যদিও এই তথ্যের সত্যতা পুলিশ বা ময়নাতদন্ত রিপোর্টের মাধ্যমে এখনো নিশ্চিত হয়নি।
ঘটনার পর মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে মৃতদেহটি পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠিয়েছি। রিপোর্ট আসলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে। আপাতত আত্মহত্যা হিসেবে ডায়রিভুক্ত করা হয়েছে, তবে সকল সম্ভাবনাই বিবেচনায় রেখে তদন্ত চলছে।”
এদিকে, এলাকাবাসী এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, “এটি শুধুমাত্র আত্মহত্যা হতে পারে না, এর পেছনে লুকানো কোনো ঘটনা থাকতে পারে, যা উদঘাটন করা জরুরি।”
অনেকেই বলছেন, একটি ঘটনার ন্যায়বিচার শুধু একজনের জন্য নয়, একটি সমাজের জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে। তাই এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা সময়ের দাবি।