দেশের ২৫টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে সরকার। গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এসংক্রান্ত দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তবে নতুন ডিসি নিয়োগের পরপরই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
জানা গেছে, এই ২৫ ডিসির মধ্যে অনেকেই ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।ফলে বিএনপিপন্থী আমলাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ।
জানা গেছে, নতুন ডিসিদের মধ্যে সর্বাধিক আলোচনায় রয়েছেন ফেনীর সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) পি কে এম এনামুল করিম। সিলেটের ডিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এই কর্মকর্তা ২০১৯ সালে ফেনীর নুসরাত হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের বাঁচাতে সব ধরনের প্রচেষ্টাই চালান। মৃত্যুর আগে নুসরাত জাহান রাফি ও তার মা শিরিন আক্তার ন্যায়বিচারের আশায় তার কাছে গিয়েছিলেন।এরপর তার বিরুদ্ধে মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগ ওঠে।
নুসরাতের মৃত্যুর আগে তার মা শিরিন আক্তারকে হুমকি প্রদানের অভিযোগ ওঠে এনামুল করিমের বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার লোকজনের দেওয়া আগুনে পুড়ে নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর পর ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন শিরিন আক্তার। তিনি বলেন, ‘আপনারা প্রিন্সিপাল সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যে মামলা করেছেন, তা প্রমাণ করতে না পারলে আপনাদের বিরুদ্ধে প্রিন্সিপালের লোকজন ৫০ লাখ টাকার মানহানি মামলা করবে।
এসব কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ছিলেন। আবার অনেকেই পিএস ও প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
নতুন ডিসি নিয়োগের পর প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তারা অভিযোগ করে বলেন, মাঠ প্রশাসনে নতুন নিয়োগ পাওয়া ডিসিরা বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী। ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২২ সালে আওয়ামী লীগ সরকার অন্তত ১০ জনের নিয়োগ বাতিল করেছিল, অথচ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় আবারও সেই ছাত্রলীগের নেতারা ডিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় এনপিপন্থী আমলাদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার শুরু হয়। গত ২০ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে ২৫ ডিসিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ওই দিন এক আদেশে ঢাকা, সিলেট, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মাগুরা, রংপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খুলনা, গোপালগঞ্জ জেলার ডিসিকে প্রত্যাহার করা হয়। পৃথক আদেশে ফরিদপুর, শেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট, চাঁদপুর জেলার ডিসিও প্রত্যাহার করা হয়।