1. live@dailytrounkhota.com : news online : news online
  2. info@www.dailytrounkhota.com : দৈনিক তরুণ কথা :
রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ০৮:২৪ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
প্রত্যক্ষভোটে মনোহরগঞ্জ বিএনপির ওয়ার্ড সম্মেলন অনুষ্ঠিত মনোহরগঞ্জে বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত মনোহরগঞ্জে ছাত্রদল কর্মীর বাবাকে জাতীয়তাবাদী প্রবাসী ফোরামের অটোরিকশা উপহার আগুনে পুড়ে সর্বস্ব হারানো শাহ আলমের পাশে মনোহরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন দেশের মানুষ আর দূর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় দেখতে চায়না- আলহাজ্ব সেলিম মাহমুদ নাথেরপেটুয়া ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত কাটুনীপাড়া দারুল উলুম মাদরাসার কমিটি, শিক্ষক ও এলাকার বিশিষ্ট জনদের নিয়ে ঈদ পূনর্মিলনী বিজিএমইএ ফোরামের মহাসচিব নির্বাচিত হওয়ায় ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনীকে ফুলেল শুভেচ্ছা ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পন  “স্বপ্ন নতুন আলোয় বানঘর” শুভেচ্ছা জানাতে এসেছেন ২৪টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

যে কারণে থমকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত: রবিবার, ৩০ জুন, ২০২৪
  • ২১৭ বার পড়া হয়েছে

মামলায় বন্ধ নির্মাণকাজ, তিন বিদেশি ঠিকাদারের স্বার্থের দ্বন্দ্ব

সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের পর দেশের দ্বিতীয় ও বৃহত্তম সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি)-এর প্রকল্প হিসেবে ইতোমধ্যে সাফল্য পাওয়া এ প্রকল্পটি মাঝপথে এসে স্থবির হয়ে পড়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিরোধের জেরে মামলা গড়িয়েছে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। আটকে গেছে ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের ঋণ। ফলে বিমানবন্দর থেকে এফডিসি পর্যন্ত চলমান এ দ্রুতগতির উড়ালসড়ক প্রকল্পের বাকি অংশের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রকল্পটির অধিকাংশ সাইটে কোনো কাজ হচ্ছে না। উদ্বোধনের অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবহারকারীদের কাছে জনপ্রিয় হওয়া এ উড়ালসড়কের তিন বিদেশি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মামলায় জড়িয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করছে। প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ডের একটি ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ এবং নির্মাণকাজের মাধ্যমে অংশীদার। প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো থাইল্যান্ডভিত্তিক ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড, চীনের শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ও সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড।

এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড নামে কোম্পানি গঠন করে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট। কোম্পানির অংশীদার তিন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার যথাক্রমে ৫১, ৩৪ ও ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ হলো এক্সপ্রেসওয়ের নির্বাহক প্রতিষ্ঠান। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে রেললাইন ধরে তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর হয়ে যাত্রাবাড়ীর কাছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এ উড়ালসড়ক। পুরো উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। প্রায় অর্ধেক কাজ সম্পন্নের পর অংশীদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরোধে অনিশ্চয়তায় পড়ল ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। অথচ এ প্রকল্পের সঙ্গেই বিমানবন্দরসংলগ্ন কাওলা এলাকায় সংযুক্ত হবে ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে। এটির নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। দুটি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সাভার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৪ কিলোমিটারের একটি নিরবচ্ছিন্ন উড়ালপথ তৈরি হবে। সাভার থেকে রাজধানীর ওপর দিয়ে এ পথ এক ঘণ্টার কম সময়ে পাড়ি দেওয়া যাবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার দূরত্ব অংশ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর এ অংশে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। গত ২০ মার্চ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) গেটসংলগ্ন র?্যাম্প যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে প্রকল্পে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। ঠিকাদার টোল নেবে ২১ বছর : বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি অনুসারে, উড়ালসড়ক দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ প্রায় ৮০ হাজার যানবাহন চলাচল করবে বলে ধারণা করা হয়, আর সর্বনিম্ন যান চলতে পারে সাড়ে ১৩ হাজার। ৮০ হাজারের বেশি যান চলাচল করলে বাড়তি যে টোল আদায় হবে, এর ২৫ শতাংশ বাংলাদেশ পাবে। অন্যদিকে সাড়ে ১৩ হাজারের চেয়ে কম যানবাহন চলাচল করলে বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারের। চুক্তিতে বলা হয়, একটানা ১৫ দিন দৈনিক গড়ে সাড়ে ১৩ হাজারের কম যানবাহন চলাচল করলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিনিয়োগকারীকে চুক্তির চেয়ে বাড়তি সময় টোল আদায় করার সুযোগ দিতে হবে। উড়ালসড়কটি ২৫ বছর বিনিয়োগকারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এর মধ্যে নির্মাণ সময় সাড়ে তিন বছর। অর্থাৎ বিনিয়োগকারী সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করে অর্থ নিয়ে যাবে।

আগ্রহ বাড়ছে উড়ালসড়কে : ঠিকাদারদের বিরোধে নির্মাণকাজ বন্ধ হওয়া প্রকল্পটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের এক প্রকৌশলী বলেন, অর্ধেক চালু হওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির প্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে, এটি নির্মাতাদের জন্য খুবই লাভজনক একটি প্রকল্প হবে। নিচের যানজট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যানবাহনের চাপ ও মানুষের আগ্রহ বাড়ছে উড়ালসড়কে। বছরের ২ সেপ্টেম্বর উড়ালসড়ক আংশিক চালুর পর গত ১০ মাসে অর্ধেক অংশে যানবাহন চলাচলের গড় খুবই সন্তোষজনক। পুরো প্রকল্পে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার যান চলাচলের প্রাক্কলন করা হলেও অর্ধেক প্রকল্পেই লক্ষ্যমাত্রার দিকে যাচ্ছে। গতকাল ২৮ জুন পর্যন্ত প্রতিদিনের টোল আদায় ও ট্রাফিক মুভমেন্টের হিসাবে দেখা যায়, এতে ১২ দিনই ৫০ হাজারের বেশি যান চলাচল করেছে। এর মধ্যে ৬০ হাজারের বেশি গাড়ি চলেছে কয়েকদিন। সর্বশেষ ১৩ জুন ৬৭ হাজার ৫৪৩টি গাড়ি চলেছে এক্সপ্রেসওয়েতে। গড়ে ৪৫ হাজারের বেশি যান চলছে দিনে। সেতু বিভাগের কর্মকর্তাদের আশা, র‌্যাম্পসহ পুরো প্রকল্পটি চালু হলে দিনে গাড়ি চলাচলের সংখ্যা শুরুতেই লাখ ছাড়িয়ে যাবে। কারণ, যানজটের এ নগরীতে জট এড়িয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হয়ে উঠেছে দ্রুতগতির এ উড়ালসড়ক। কোথাও কোনো কর্মচাঞ্চল্য নেই : গতকাল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কয়েকটি ওয়ার্কস্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কোনো কর্মচাঞ্চল্য নেই। অধিকাংশ পয়েন্টে এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু হাতিরঝিল আর পান্থপথে অল্প পরিসরে কিছু শ্রমিক কাজ করছে। বাকি চারটি জায়গায় (কাওলা, মগবাজার, মালিবাগ, কমলাপুর) অল্পসংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী, বৈদ্যুতিক মিস্ত্রিসহ কিছু কর্মী রাখা হয়েছে। প্রকল্পের কর্মীরা জানান, কোথাও তিন মাস ধরে কাজ বন্ধ, কোথাও চার মাস কাজ হচ্ছে না। সরকারের অগ্রাধিকারমূলক এ প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আর হচ্ছে না। এরই মধ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দ্বন্দ্ব গিয়ে আদালতে পৌঁছেছে। 

মামলা চলছে ঢাকা ও সিঙ্গাপুরে : ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ নিয়ে সব পক্ষের দৃষ্টি এখন আদালতের দিকে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরে নিষ্পত্তির মামলা চলছে। গত ৩০ মে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আট বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডকে হস্তান্তরে আপাতত স্থিতাবস্থাই থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন। দেনাপাওনা নিয়ে থাই ও চায়না কোম্পানির বিরোধ সিঙ্গাপুরের আরবিট্রেশন সেন্টারে প্রথম মিটিং হওয়া পর্যন্ত এ স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে বলে এ আদেশ দেন। এর মানে সিঙ্গাপুরের আরবিট্রেশন সেন্টারের সিদ্ধান্তের পরই জানা যাবে এ প্রকল্পের পরবর্তী কার্যক্রম কী হবে। এদিকে প্রকল্পে অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান চায়না এক্সিম ব্যাংক জানিয়ে দিয়েছে, শেয়ার হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত তারা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজে টাকা দেবে না। এর ফলে আপাতত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ বন্ধ থাকবে। সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন বলেছেন, কিছু আইনগত বিষয় নিয়ে মামলা হয়েছে। সে মামলাটি তাদের নিজেদের বিষয়। এতে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। আমরা মামলাটির ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছি। আমরা দুই পক্ষকে লিখিতভাবে অনুরোধ করেছি, তারা যেন কোনোভাবে কাজটা বন্ধ না করে। আমরা কাজটা দ্রুত শেষ করতে চাই। প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী, কোনো পক্ষ অর্থ জোগাড়ে ব্যর্থ হলে বাকি প্রতিষ্ঠান চাইলেই তার শেয়ার নিয়ে নিতে পারবে। সেদিকেই আগ্রহ দুই চীনা প্রতিষ্ঠানের। অন্যদিকে অর্থের জোগান না দিয়েই নিজেদের শেয়ার ধরে রাখতে চায় ইতাল-থাই। এ টানাপোড়েন ও মামলার জেরে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে চায়নিজ ব্যাংক। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, ঋণ বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শেয়ার নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকেও প্রকল্পের নির্মাণকাজ ব্যাহত হচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হবে না জেনে গত ১৭ জানুয়ারি ঋণ আটকে দিয়েছে চীনের দুটি ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান চায়না এক্সিম ব্যাংক ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক অব চায়না (আইসিবিসি)। অবশ্য প্রকল্পের পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আখতার গণমাধ্যমকে জানান, নির্মাণকাজ বন্ধ নেই। কাজ চলছে সীমিত পরিসরে। তবে ঋণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ শেষ করতে এক বছর বেশি সময় লাগতে পারে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থায়নের নতুন উৎস খুঁজছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট