শ্রীনগরে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে ১১ বছরের এক শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের কারণে শিশুটি এখন অস্বাভাবিক আচরণ করছে। কেউ সামনে গেলেই মারবেন না বলে চিৎকার করে উঠছে। এই ঘটনায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামী ইয়াছিন আরাফাতকে (২৪) গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেউলভোগ সবুজহাটি এলাকার ইমান আলীর বাড়ির ভাড়াটিয়া কাঠমিস্ত্রি সাগর হাওলাদারের ছেলে নাহিদ (১১)কে মোবাইল ফোন চোর অপবাদ দিয়ে গত ২৪ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাদের বাসার সামনে থেকে একই এলাকার মোস্তফা জামানের ছেলে ইয়াছিন আরাফাত, তার বন্ধু রিয়াদ, শাহাদাৎ, শিহাব সহ বেশ কয়েকজন মিলে ধরে নিয়ে যায়। ইয়াছিন আরাফাত ও তার লোকজন মিলে নাহিদকে তাদের বাড়িতে নিয়ে গাছের ডাল ও বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট শুরু করে। খবর পেয়ে শিশু নাহিদের বাবা-মা ছেলেকে উদ্ধারের জন্য গেলে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে তারা মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য নাহিদকে উলঙ্গ করে বিভিন্নস্থানে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে নাহিদের হাতের আঙ্গুলে প্লাস দিয়ে চাপ প্রয়োগ করে আঘাত করে। এতেও কাজ না হওয়ায় নির্যাতনকারীরা গ্যাস লাইটের আগুনের তাপ ও চাবি আগুনে পুড়ে লাল করে শরীরের বিভিন্নস্থানে ছ্যাকা দেয়। তারা দিনভর নাহিদকে আটকে রেখে নির্যাতন করতে থাকে।
শ্রীনগর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাহফুজা পারভীন চৌধুরী বলেন, মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের কারনে শিশুটি এখন অস্বাভাবিক আচরণ করছে। কেউ কাছে গেলেই আমাকে আর মারবেননা মারবেননা বলে চিৎকার করে উঠছে। শ্রীনগর উপজেলা সমাজ সেবা অফিস ছেলেটির প্রয়োজনীয় চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে।
এই ঘটনায় সাগর হাওলাদার বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে শ্রীনগর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, শিশুটিকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা অমানবিক। পুলিশ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা গ্রহন করে প্রধান আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।