
 ভুতটা ছিলো  দেখতে বিশাল দেহের অধিকারী দিনের বেশীর ভাগ সময়  সে ঘুমিয়ে  কাটায়, সন্ধ্যায়  জেগে উঠে এজন্যে সন্ধ্যায়  বাহিরে গেলেই মা খুবই  চিন্তিত  হয়ে পড়ে কবে কি হয়ে  যায়। মা বললো খবরদার  সাগর পাড়ে যাস না এক অভিশপ্ত ভুত ঐদিকে বাস করে খুবই  ভয়ংকর। রাজা এক যাদুকর দিয়ে  তার চোখ দুটি  বন্দী করে রেখেছে যাদুর পট্টি দিয়ে। সে বাচ্চা আর বুড়ো পেলেই ঘাড় মটকে দেয় রক্ত চোষে খায়।  সেই হতে সাগর  পাড়ে গেলেই  শরীর চম্ চম্ করে ভয়ে আমার  গলা শুকিয়ে  যায়।
শুনেছি
ভুত টার এক চোখ কানা আর  পেট  পাহাড়ের মতো বিশাল , বছরে নাকি একবারই  খায় কবে খায় জানা নেই।  তার পা দুটো গাছের সমান লম্বা,  হাত দুটো যতো ইচ্ছে  লম্বা করতে পারে।
দাদীকে বললাম  মাকে বললাম  পুরো কাহিনী  বলোতো।
দাদী বললো -সে ভুতের  অনেক  কাহিনী  আজ একটাই  শুনাচ্ছি–
 এক দেশের   এক  রাজার মেয়েকে  একটা ছেলে  খুব  ভালো বাসতো ।
সে  রাজ দরবারে গিয়েছিলো অন্য সব রাজ পুত্রদের সাথে  প্রতিযোগিতা করতে,  কারণ রাজকন্যা বলেছিলো ,
যে ছেলে তার হারানো আংটি ফিরিয়ে দিতে  পারবে  সেই  হবে তার স্বামী। তাই কারা  অংশগ্রহণ  করবে তাদের সকলেকেই উপস্থিত  হতে বলা হলো।
সকাল বেলা রাজকন্যা মন্ত্রী পরিষদকে নিয়ে  সব প্রতিযোগীদের  নিয়ে  তাদের রাজ্যের সমুদ্র   পাড়ে  নিয়ে গেলো।
আর হাতের সবচেয়ে দামী হীরার আংটি নিক্ষেপ করলো বললো আজ রাত বারোটার মধ্যে এই আংটিটি  খুজে এনে রাজকন্যার  হাতে যে পরিয়ে দেবে সেই হবে  রাজকন্যার স্বামী।
সময় শুরু হলো বলেই সবাই যার যার মতো চলে গেলো। দুই একজন রাজ পুএ অনেক ভাবলো চেষ্টা ও চালালো। হতাশ হয়ে চলে গেলো, এদিকে গরীব ছেলেটা সন্ধ্যায় বসে বসে খুব কাদঁতে ছিলো আর বলছিলো আমার তো কোন ক্ষমতা টাকা পয়সা কিছু নেই, গরীবের ভালোবাসার কোন দাম নেই।
রাজকন্যা যদি বলতো  তোমার  শরীরের সব রক্ত দিয়ে  দাও আমি দিয়ে  দিতাম কিন্তু  এ কেমন শর্ত।
আবার  ও কেদেঁ  উঠলো এমন সময়  হঠাৎ  আওয়াজ  হলো, ভয় নেই আমি তোমার  সাথে আছি বলো কি করতে হবে।
ছেলেটা ভীষন ভয় পেয়ে  এদিক  সেদিক তাকাতে  থাকলো অন্ধকার  হয়ে এলো। দেখলো বিশাল  এক পাহাড়ের  মতো দৈত্য  বললো আমি কানা ভুত আমার  হাতের তালুতে বসে যাও। হাত এগিয়ে  দিলো। ভয়ে জড়সড় রহিম ভুতের  হাতের তালুতে বসতেই  সেই সাগর পাড়ে এক কদম দিয়ে চলে গেলো  আর বললো  আমি সব জানি।     
        
 তুমি আমার  চোখের বাধঁনটা খুলে দাও।
 করিম  ভুতের  চোখের বাধন খুলে দিলো,  সাথে সাথে মুখটা হা করতেই সমুদ্রের পানি সব টুকু ভুত পেটে  নিয়ে  ফেললো,  আর চোখ দিয়ে  আগুন বের করে  সব কিছু ই পুড়িয়ে ফেললো  তা দেখেই  করিম জ্ঞান  হারালো।  লম্বা হাত দিয়ে  সেই আংটিটা নিয়ে  আরেক পা দিয়ে  রাজ সভার কাছে ছেলেটিকে নামিয়ে  দিয়ে  কি যেনো মন্ত্র পড়ে ফু  দিয়ে  বললো যাও  শোনো
             
তুমি আর গরীব থাকবে না। তুমি আমার  চোখের বাধন খুলে দিয়ে আমার  ক্ষমতা ফিরিয়ে  দিয়েছো।  কারন নিস্পাপ মানুষের  হাত না হলে এই বাধঁন খুলতো না।
শুনো করিম  আমিই কানা ভুত,আগে খারাপ  ছিলাম ,এক যাদুকর আমার চোখ বেধে দিয়েছিলো তারপর  হতে বুঝলাম  মানুষের  ক্ষতি করতে নেই।
 তুমি যতো বড় হও ততো বেশী মানুষকে ভালোবাসবে,ক্ষমতার অপব্যবহার  করবে না।         
তুমি একদিন সবার প্রিয় হবে, যাও তোমার রাজ কন্যার কাছে, তাকে তুমি সত্যি ভালোবাসো তোমার কোন লোভ নেই তাই আমি ও তোমার বন্ধু হলাম। আমাকে এই সমুদ্রেই পাবে।
 করিম  উপস্থিত  রাজদরবারে প্রবেশ  করতেই  রাত এগারোটায় সবাই  হেসে বললো-এ কি ব্যাপার এই গরীব ছেলেটা কি করে  রাজকন্যার স্বামী  হবে?
 করিম বললো আমি রাজ কন্যাকে ভালোবাসি।
রাজকন্যা বললো প্রমাণ  দাও –নয়তো গর্দান যাবে।
করিম এগিয়ে  গিয়ে  সেই আংটি রাজকন্যার হাতে পরিয়ে দিলো, রাজ দরবারের সবাই  দাড়িয়ে  শির নত করে বাহ! বাহ! বলে অভিনন্দন  জানালো আর ফুলের মালায় রাজকীয়  ভাবে করিমকে সংবর্ধনা  জানালো ঘোষণা  দেয়া  হলো আগামীকাল  রাজকন্যার বিয়ে…….
কানা ভুত দুর হতে সব দেখে চলে গেলো সেই হতে  কানা ভুত ঠিক  করলো  এখন  হতে রাজ্যের ছেলেমেয়েদের  ভালো মন্দ খেয়াল  রাখবে
সেই হতে বাচ্চারা সন্ধ্যার সময় ঠিক মতো পড়ায় মন দেয় নয়তো কানা ভুত ঘাড় মটকে দেবে এই ভয়ে স্কুলের কাজ গুলো মন দিয়ে করে কারন ভালো ছাত্র ছাত্রী যারা সততার সাথে বাবামা ও শিক্ষকদের মান্য করে সম্মান করে কানা ভুত তাদের বন্ধু হয়ে যায় কোনো ক্ষতি করে না।
সমাপ্ত