লক্ষ্মীপুর পৌরশহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় গ্রীনলাইফ ফিলিং স্টেশনে বাসে গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১০জনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জয়নাল আবেদিন।

নিহতরা হলেন, সদর উপজেলার চরমনসার বটুমিয়ার ছেলে সুমন হোসেন (৩০), বাঞ্চানগর এলাকার সুজামিয়ার ছেলে মো. ইউসুফ মিয়া (৪৫) ও হৃদয় হোসেন (২৩)।

রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় ২০জন অগ্নিদগ্ধ হন। এদের মধ্যে ১০জনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহত তিনজন সিএনজির চালক ও আহতরা বাস ও সিএনজির চালক বলে জানিয়েছেন ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার আল-আমিন।

ফিলিং স্টেশন, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাত পৌনে ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর-রামগতিগামী মেঘনা পরিবহন নামে একটি বাস গ্যাস নিতে আসে গ্রীনলাইফ ফিলিং স্টেশনে। গ্যাস দেয়ার সময় হঠাৎ বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এতে চারদিকে ধোঁয়া আচ্ছন্ন হয়ে গেলে স্টেশনে থাকা সিএনজি চালকরা ছোটাছুটি করতে থাকেন। ঘটনাস্থলেই মারা যান সিএনজির তিন চালক। আহত হন আরো ২০জন।

পরে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  এদের মধ্যে ১০জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চালকরা জানায়, দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস নিচ্ছিলেন সিএনজির চালকরা। হঠাৎ মেঘনা পরিবহন নামে একটি বাস ফিলিং স্টেশনে এসে লাইনে না দাঁড়িয়ে সরাসরি গ্যাস নিতে চলে যায়। এসময় পাম্পের অপারেটর বাসের গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস দিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে গ্যাস সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়। তবে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলেও সঠিক সময়ে না আসায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ করেন চালকরা।

লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রনজিত কুমার বলেন, খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে তিনজন মারা যান। ২০জন আহত হন। তবে বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্মমানের হওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়নাল আবেদিন বলেন, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে ঘটনাস্থলে তিনজন মারা যায়। গুরুতর আহত হয় ২০জন। আহতদের মধ্যে কারো পা ও কারো হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এদের মধ্যে ১০জনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। রক্ত দরকার।